অফিস থেকে বাসে করে বাড়ি ফিরছি অন্য বাসযাত্রী দের মুখে একই কথা আজকে শহরের নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের মিছিল - কেউ বলছে এই প্রতিবাদ দরকার ছিল, কেউ বলছে কিছু হবে না দাদা এবং তর্ক চলছে ...
আমিও এই সমাজের অংশ তাই আমার কিছু কথা আছে কিন্তু কোথায় বলি? আমি দাদা কাকাদের মতো চায়ের দোকানে আড্ডা মারি না আবার মা মাসি দের মতো পুকুর পাড়ে বাসন মাজতেও যাই না তাই খুব ভয়ে ভয়ে এখানেই মনের কথা গুলো শেয়ার করছি -
প্রথমেই বলে রাখি মৃনাল সেনের মতো আমিও শারীরিক ভাবে দুর্বল তাই আমি কোনদিন কোনো প্রতিবাদে ওতো মানুষের ভিড়ে পথ হাটি নি, লোডসেডিং এর অন্ধকার ঘর ছাড়া কোথাও কখনও মোমবাতি জ্বালাইনি, তা বলে কি আমি প্রতিবাদী নই?
আজকের এই মিছিল কিংবা নন্দীগ্রাম হত্যার পর মিছিল দুটোতেই আমার প্রতিবাদ ছিল ও আছে । কিন্তু প্রতিবাদ হওয়া উচিত মানবিক নইলে সেই ভোতা লোক দেখানো প্রতিবাদে কারোর কিছু ছেড়া যাবে না - দিল্লি ধর্ষণের পর ওখানে যে প্রতিবাদ দেখেছিলাম সেটা আমার কাছে অনেক বেশি মানবিক মনে হয়েছিল, শীতের রাতের ওই কনকনে ঠান্ডায় জলকামানের সামনে কোনো রাজনৈতিক রং ছাড়াই তারা বুক চিতিয়ে দাড়িয়ে ছিল । টিভিতে দেখলাম আজকের এই মিছিলে অনেকেই শুধু ক্যামেরার সামনে মুখ দেখানোর জন্য ছটপট করছে, আমার কাছে এরা মানুষ নয় এরা শুধু রং, এমন কি দিল্লি ধর্ষণের পর কলকাতায় যখন মোমবাতি মিছিল বেরিয়েছিল সেইদিন এই ফেসবুকেই দেখেছিলাম একটা মেয়ে একহাতে মোমবাতি আর একহাতে আইসক্রিম নিয়ে বয়ফ্রেন্ডের সাথে গা জড়িয়ে ক্যামেরার সামনে পোজ দিয়ে ফটো আপলোড করেছেন - এরকম প্রতিবাদের কোনো দাঁত নোখ থাকে না - এইরকম প্রতিবাদ বড্ড দুক্ষ দেয় ...
তবে হাজার হাজার মানুষ মনের তাগিদেও আজকের প্রতিবাদে এসেছেন তারা অসম্ভব ভালো মানুষ আমার কাছে :)
আর একটা কথা বলবো - বিছানায় স্বামী স্ত্রীর যৌনতা, পর্ণগ্রাফি আর ধর্ষণ কখনও এক জিনিস নয়, চলে যাওয়া ঋতুপর্ণ ঘোষই প্রথম আমাদের দেখিয়েছিল তার " দহন " সিনেমায় কিভাবে চার কামরার বিছানায় একজন স্বামী তার বউ কে ধর্ষণ করে, তাই পর্ণগ্রাফির সাথে যুক্ত থাকলেই সে ধর্ষকের মতো ঘৃণ্য নয়, তাই সানি লিওন কে আমি সন্মান করি, সে আর যাই হোক ধর্ষক / খুনী নয় - বুক ফুলিয়ে তার জীবিকার সার্থে তার শরীরের কিছু অংশ মানুষের কাছে তুলে ধরছে, আমার কাছে সানি লিওনের সাথে একজন ফুল বেচনেবালি অথবা একজন ধুপকাঠি বেচনেবালার কোনো তফাৎ নেই -
তাই ধর্ষক শুধু ধর্ষকই, তারা নাবালক, সাবালক, বিত্তশালী, গরিব, বিশিষ্টজন অথবা ছোটলোক হয় না তারা শুধুই ধর্ষক, আমি এ দেশের বিচারক হলে ওদেরকে ফাঁসিই দিতাম । তবে যে দেশে ধর্ষক নাবালক বলে জামিন পায় আর শ্রীসন্তের মতো চোর বাড়ি ফিরে বীরের সন্মান পায় সে দেশে কিছু বলতেও অবাক লাগে - তবু রাগ / দুঃক্ষ হয় আর সেই থেকেই এই লেখা । রাগ / দুঃক্ষ অনেকটা নিমপাতার মতো চিনি মিশিয়ে খেলেও তিতেই লাগে তাই এরকম বাজে ভাষায় মনের কথা গুলো বললাম, এখানে আমার আপনজন, পরিবারের লোকজন, অনেক গুরুজনরাও আছেন এইসব কথা শুনতে খারাপ লাগলেও রাগের সময় তো আর কাব্যি করতে পারি না -
No comments:
Post a Comment