চারপাশে ফুল আছে, নেই তার গন্ধ।
রুপ আছে, রং আছে, দেখতে কি খাসা
গন্ধ নেই, ফুল তার হারিযেছে ভাসা।
গাছে-গাছে বেল ফুল, জুঁই ফুল ফোটে
গন্ধ কই? বেমানান ভাল নয মোটে।
যেন রকমারি কাগজের মিছিমিছি ফুল
ভ্রমরাও ভুল করে ফোটায় না হুল।
ছোট বড় সকলের চিন্তা ভারি
গন্ধ কোথা হারালো? কোথা তার বাড়ি?
কেও ডাকে পালোয়ান, কেও ডাকে বদ্যি
খবর গেল রাজার কাছে, কেঁপে ওঠে গদ্দি
রাজা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা, ভেবে মাথা চুলকায়
রেগে গিয়ে প্রানপনে খুঁটে খুঁটে নোখ খায়
চিত্কার চেঁচামেচি, ডেকে আনে মন্ত্রী
কে এই গন্ধচোর? করো তারে বন্দি
শত শত সৈন্য রাত জেগে পাহারায়
চোর কে তবু কেও ধরিতে নাহি পায়
দিন কাটে, মাস কাটে ফুলে নেই গন্ধ
মন খারাপে রাজার নাওয়া খাওয়া বন্ধ
সেই দেখে রাজার কুমার পক্ষীরাজে চড়ে
ফুলের বাগান পাহারা দিল হেতায় হোতায় ঘুরে
চুপি চুপি ভোর রাতে ফুলপরী এসে
ফুলের গন্ধ চুরি করে মিষ্টি করে হেসে
সোনারকাঠি, রুপোরকাঠি যেই না ছোঁয়ায় ফুলে
গন্ধগুলো ফুসমন্তর অমনি যে যায় চলে
রাজার কুমার অবাক হয়ে, বলে ও ফুলপরী?
আমাদের ফুলের গন্ধ করছো কেন চুরি?
ফুলপরী রেগে বলে তোরা বড্ড পাজি
ফুলের মধ্যে গন্ধ আমি রাখতে নই আর রাজী
গাছের তোরা যত্ন নিস্না, ফুল বাসিসনা ভালো
কাগজ ফুলে ঘর সাজাস, তোদের মনগুলো সব কালো
রাজার কুমার কানটি ধরে বলে "আর হবে না ভুল"
মিষ্টিপরী ফিরিয়ে দাও আমাদের গন্ধমাখা ফুল
হেসে উঠে ফুলপরী বলে মনে রাখিস, যত্ন করিস ভাই
ফুলের মত সুন্দর এই ভুবনে আর যে কিছুই নাই
সোনার কাঠির পরশ দিয়ে গন্ধ দিলো ফুলে
বিদায় বন্ধু জানিয়ে ফুলপরী উড়ে গেল চলে
স্বপ্ন দেখে রাজার কুমার ঘুম ভেঙ্গে হাসে
ফুলপরী যে তারই দিদি, ঘুমিয়ে আছে পাশে।
No comments:
Post a Comment